সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট কারচুপির অভিযোগে বিএনপি ভোট বর্জন করেছিলো। সেই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীরা ৬ টি আসনে বিজয়ী হয়েছিলেন। তখন বিএনপির পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছিলো আওয়ামী লীগের অধীনে কোন নির্বাচনে যাবে না বিএনপি এবং যারা এমপি নির্বাচিত হয়েছে তারা শপথ নেবে না। সংসদ নির্বাচনের পর উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। চতুর্থ ধাপে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ আড়াইহাজার সোনারগা উপজেলার ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় গত ৩১ শে মার্চ। সেই নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি কে না দাঁড়ানোর নির্দেশ দেয় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি। কেন্দ্রর নির্দেশ মেনে নেয় নারায়ণগঞ্জ বিএনপি। তাদের ধারণা ছিলো বড় কোন আন্দোলের মাধ্যমে সরকার কে পতন করে পুনরায় নির্বাচন আদায় করবে। নারায়ণগঞ্জের সকল আসন বিএনপির দখলে যাবে কিন্তু তা হয় নি।
গত ২০১৪ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি নারায়ণগঞ্জের ৩ টি উপজেলাতে বিজয়ী হয়। সোনারগা উপজেলায় বিজয়ী হয়েছিলো আজাহারুল ইসলাম মান্নান, রূপগঞ্জে ও আড়াইহাজারে হেরে ছিলো মাহাফুজুর রহমান আকন্দ ও গাজী এম এ মাসুদ সদর বন্দরে বিজয়ী হয়েছে আতাউর রহমান মুকুল ও আজাদ বিশ্বাস। বিএনপির ভুল সিদ্ধান্তের কারণে নিজেদের দখলে থাকা সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ হাতছাড়া করেছে। এছাড়া সদ্য সমাপ্ত উপজেলা নির্বাচনে আড়াইহাজারে বিএনপি শক্তিশালী অবস্থানে ছিলো কিন্তু তারা প্রার্থী দেয় নাই। কেন্দ্রের ভুল সিদ্ধান্তে কপাল পুড়ছে রূপগঞ্জ আড়াইহাজার সোনারগা বিএনপির প্রার্থীদের । এখন দেখার বিষয় সদর- বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি কি করে।
গতাকাল নানা জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্যরা শপথ নিয়েছেন। আর সেই শপথে সম্মতি দিয়েছে তারেক রহমান। এদিকে নির্বাচনে ভোট কারচুপির অভিযোগ তারেক রহমান হাইকোর্টে মামলা দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছিলো নারায়ণগঞ্জ ২ আসনের বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নজরুল ইসলাম আজাদ কে। আজাদ হাইকোটে মামলা দায়ের করেছে। এক দিকে শপথ আরেক দিকে মামলায় তারেক রহমানের সম্মতি এ নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে। অনেকে হায় হায় করছে উপজেলায় প্রার্থী না হয়ে। এদিকে একটি সুত্রের মাধ্যমে জানা গেছে মামলা করে বিপাকে পড়েছে নারায়ণগঞ্জ ২ আসনের বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম আজাদ । বিএনপির সংসদ সদস্যরা শপথ নেয়ায় এক দিকে লাভ আরেক দিকে ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষতির পাল্লাটাই বেশি হয়েছে। তারা হাত ছাড়া করছে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জেলা নারায়ণগঞ্জের তিন টি উপজেলা পরিষদ। অনেকে মনে করছে বিএনপির সিদ্ধান্তহীনতায় দলের জন্য এমন ক্ষতি হয়েছে।
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছে, বিএনপির প্রার্থীরা শপথ নেয়ায় ভালো কাজ করেছে। মামলা এবং উপজেলা নির্বাচন বর্জন করাটা ঠিক হয় নি তাদের। যে কোন দল নির্বাচন বর্জন করলে ওই দলের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। যেমনটা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপিতে। তারা সোনারগা উপজেলা পরিষদ হাতছাড়া করেছে। আজাদ কে দিয়ে ভোটকারচুপির মামলা করিয়ে আজাদের শত্রু সৃষ্টি করেছে।